নারীর ক্ষমতায়ন বলতে কি বুঝ? নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিবন্ধকতা সমূহ

নারীর ক্ষমতায়ন ও এর প্রতিবন্ধকতাগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হবে। নিচে যে সকল তথ্য তুলে ধরা হবে আশা করি সেই তথ্যগুলো আপনার ভালো লাগবে। যেহেতু আমাদের সমাজে নারীরা অবহেলিত সেহেতু নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে আমাদের জেনে থাকা প্রয়োজন।
নারীর ক্ষমতায় বলতে কি বুঝ? নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিবন্ধকতা সমূহ
এছাড়া আমরা এখানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিবন্ধকতা ও এর উপায়সমূহ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করব। তাই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।

ভূমিকা

সাম্প্রতিককালে বিশ্বে আলোচিত একটি বিষয় হলো নারীর ক্ষমতায়ন।তাই নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আমাদের জানতে হবে ক্ষমতায়েন কাকে বলে বা ক্ষমতায়ন বলতে কী বোঝায়। আসুন আমরা ক্ষমতায়েন সম্পর্কে জেনেনি।

ক্ষমতায়ন

ক্ষমতায়ন সামাজিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আর ক্ষমতায়ন উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং একটি বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া।

ক্ষমতায়েন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের জীবনকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

একজন মানুষ যখন জীবন নির্বাহের পাশাপাশি কারো ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের সকল বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে তখন সেই অবস্থাকেই প্রকৃত ক্ষমতায় বলা হয়।
ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি কারো উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

নারীর ক্ষমতায়ন

নারী ক্ষমতায়ন বলতে আমরা বুঝি নারীকে ক্ষমতা ও কৃতিত্ব প্রদান করা। নারীর ক্ষমতায়েন হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে নারী ব্যক্তিগত ও মানবিক সম্পদের উপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। নারীর ক্ষমতায়ন তখন থেকে শুরু হয় যখন নারীরা তাদের ক্ষমতাহীনতার কারণ সম্পর্কে তাদের ধারণা পরিবর্তন করতে সচেষ্ট হয়।

সাধারণত উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নারীকে সরাসরি অংশগ্রহণ করানোর প্রক্রিয়াকে নারীর ক্ষমতায় বলা হয়। নারীর ক্ষমতায়ন প্রশ্নের দুটি প্রত্যয় সরাসরি বিবেচনা করা প্রয়োজন। তা হচ্ছে নারীর অবস্থা ও  নারীর অবস্থান। 

নারীর অবস্থা বলতে বুঝায় নারী বস্তুগত অবস্থা, নারীর পুষ্টি ,স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আয় প্রভৃতি। অন্যদিকে নারীর অবস্থান হলো সরাসরি ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ সম্পদের অধিকার পছন্দ ইত্যাদি।

অর্থাৎ নারী যখন কারো অধীনস্থ থাকবে না থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে,এবং তাদের বুদ্ধি ও সম্পদের উপর যথেষ্ট কর্তৃত্ব থাকবে ,ব্যবসা বাণিজ্য থেকে সকল ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ করার ক্ষমতা অর্জন করবে তখন তাকে বলা হবে নারীর ক্ষমতায়ন।

ক্ষমতায়নের স্তর

জাতিসংঘ ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে যে সংজ্ঞা প্রদান করেছেন, সেই সংজ্ঞা অনুযায়ী ক্ষমতায়নকে পাঁচটি স্তরে লক্ষ্য করা যায়। যথা,

ক) কল্যাণ;

খ) সম্পদ আহরণ ও নিয়ন্ত্রণের অবাধ সুযোগ ও অধিকার;

গ) নারী জাগরণ;

ঘ) অংশগ্রহণ;

ঙ) নিয়ন্ত্রণ;

চ) ক্ষমতায়ন।

নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্য

নারীর ক্ষমতায়নে বেশ কিছু লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য রয়েছে। লক্ষ্যগুলো নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো;

ক) পিতৃতান্ত্রিক মতাদর্শ ও নারীর অধঃস্তনতার অনুশীলনকে চ্যালেঞ্জ এবং রূপান্তর করা।

খ) কাঠামো ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠান যা নারীর প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি করে তা পরিবর্তন করা।

গ) বস্তুগত সম্পদ এবং জ্ঞান সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ করা।

ঘ) নারীর ক্ষমতায়েন পুরুষকেও বাস্তবায়ন করবে। নারীর ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া পুরুষের বিরুদ্ধে নয়।

ঙ) নারীর ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া পুরুষকেও মুক্ত করবে। তারা নির্যাতন ও শোষণকারীর ভূমিকা থেকে মুক্তি পাবে।

চ) বিদ্যমান সমাজে পুরুষের দায়িত্ব বলের যে সকল কাজ আছে তা থেকে মুক্তি পাবে। এতে পুরুষরাও গৃহকাজ এবং শিশু্র প্রতিপালনের অংশ নেবে। বিনিময়ে নারীরা পুরুষের কাঁধে চাপানোর সনাতন দায়িত্ব পালনে অংশ নেবে।

নারীর ক্ষমতায় ও বাস্তব প্রেক্ষাপটঃ বাংলাদেশ

বাংলাদেশের নারীরা সর্বদায় পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার সনাতনী ধ্যান-ধারণা ও মূল্যবোধ এবং লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হয়। বাংলাদেশে পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকার কারণে নারীরা শিক্ষা ,স্বাস্থ্য ,চাকরি ও সুশাসনে প্রতিষ্ঠান ও অপ্রতিষ্ঠানিক বহু সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

বাংলাদেশের নারীরা সন্তান ধারণ করে, জন্ম দেয়, শিশুদের প্রতি পালন করে এবং সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম করে , অথচ তারা কখনোই তাদের কাজের জন্য যথা উপযুক্ত স্বীকৃতি পায় না। বাংলাদেশের নারীরা পুরুষদের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি কাজ করে। যদিও ঘর-গৃহস্থালি কাজে যুক্ত নারী শ্রমের সামাজিক স্বীকৃতি না থাকলেও অর্থনৈতিক মানদণ্ড কিংবা জাতীয় আয় এর কোন হিসাব নেই।

বাংলাদেশের পারিবার ভিত্তিক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প নির্মাণে নারীরা অবদান ও শ্রমমূল্য জাতীয় আয়ের প্রতিফলিত হয় না। বাংলাদেশের নারী শ্রেণী পরিচিত সব সময় নির্ধারিত হয় পাশাপাশি অবস্থানের পুরুষ সদস্যের মান মর্যাদা প্রতিপত্তি ও পোশাকের ভিত্তিতে।

 এমন কি পরিবারের মধ্যেও, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় নারীরা বেশি বঞ্চিত হয়ে থাকে। যেমন নারীরা কম খাদ্য গ্রহণ করে, স্বাস্থ্য সেবা এবং উত্তরাধিকার সূত্রের সম্পত্তি গ্রহণ করা একেবারে সীমিত। 

বাংলাদেশের সংবিধানিকভাবে নারী ও পুরুষ উভয়ের সমান অধিকার স্বীকৃতি থাকলেও পারিবারিক ও ধর্মীয় আইন নারীর সার্বভৌম সত্তা ও অধিকার খর্ব করে রেখেছে। তবে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও গুরুত্বপূর্ণ এটা পালন করেছে।

আয় বৃদ্ধি মূলক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রভুতি সেবা প্রাপ্তিতে নারীর গুরুত্ব বাড়ছে। নারীরা পুরুষদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণ করছে।

প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালে সরকারি চাকরিতে ১০ ভাগ কোটা নারীর জন্য সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে পুলিশ, বিচারকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে সচিব পর্যায়ে পর্যন্ত মহিলারা রয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের প্রয়াস পরিলক্ষিত হয়। তবে তৃণমূল পর্যায়ে নারীর ক্ষমতায়ন বাংলাদেশের জন্য এখনো একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিবন্ধকতাঃ বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

এখনও বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রচুর প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বাংলাদেশের নারীরা বাধ্য হয়ে কৃষি বা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিম্ন পরিশ্রমে কাজ করে। মজুরি বৈষম্য ছাড়াও, নারীদের সাধারণত শ্রম বাজারে প্রবেশাধিকার সমস্যা রয়েছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নারীদের ভূমিকা গৌণ।

বাংলাদেশের অধিকাংশ নারীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পুরুষদের ওপর নির্ভরশীল। এর প্রধান কারণ হলো অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা। এই অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে নারীরা সর্বদা নিজেদেরকে পুরুষদের তুলনায় হেয় মনে করে ও পুরুষদের ওপর নির্ভর করাকে প্রাধান্য দেয়।

বাংলাদেশের পুরুষদের যত কাজের ক্ষেত্র আছে নারীদের তেমনটা নেই। ফলে এবং পুরুষ নির্ভরশীলতা বাড়ে যা নারীর ক্ষমতায়নের বাধা হিসেবে দাঁড়ায়।

আমাদের সমাজে নারী শিক্ষার বড় অভাব পরিলক্ষিত হয় । ফলে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখেনা। এবং ও শিক্ষা ও কুসংস্কার কুশিক্ষা অন্ধকারেই থেকে যায়। যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতা থাকে না ফলে তারা কোন কাজে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে না।

আমাদের সমাজে ধর্মীয় প্রভাব খুব বেশি দেখা যায় । যা অধিকাংশ সময় নারীর বিরুদ্ধে গেছে। মূলত ধর্মীয় চিন্তা চেতনার ভুল ব্যাখ্যা প্রদানের মাধ্যমে নারীদের সমাজে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। ফলে নারীরা বাহিরে জগৎ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন থেকে বিরত থাকে।

বাংলাদেশের নারী ক্ষমতায়নের প্রতিবন্ধকতা গুলো নিচে দেওয়া হলঃ

১. পিতৃতান্ত্রিক মূল্যবোধ;

২. দারিদ্র;

৩ প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা;

৪. শিক্ষা ক্ষেত্রে;

৫. সচেতনতার অভাব;

৬ .সামাজিক নিরাপত্তার অভাব;

৭. কর্মমুখী ও সুশিক্ষার অভাব;

৮. সম্পত্তির মালিকানার অভাব;

৯ .কর্মসংস্থানের অভাব;

১০. ক্ষমতা ও সম্পদের অভাব;

১১ .নিরাপত্তার অভাব;

১২. গণমাধ্যমে নেতিবাচক ভূমিকা;

১৪ .সুযোগের অভাব;

১৫. জেন্ডার শ্রম বিভাজন;

১৬. কুসংস্কার;

১৭. রাজনীতিতে নারীদের সীমিত অংশগ্রহণ;

১৮. নারীর অবদানে মূল্যায়ন না দেওয়া।

নারীর ক্ষমতায়নে প্রতিবন্ধকতা দূরকরণের উপায়সমূহ: বাংলাদেশ

বেশ কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিবন্ধকতা দূর করা যেতে পারে। পদক্ষেপগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

১. নারী শিক্ষা নিশ্চিত করা;

২. পুরুষদের কর্তৃত্ব কমিয়ে আনা;

৩. নারীদের সুবিধার জন্য যথার্থ আইন প্রণয়ন করা;

৪. নারীদের আত্মনির্ভরশীল হতে শেখা;

৫. নারীদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করা;

৬. কর্মমুখী শিক্ষা দান;

৭. নারী উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দেওয়া;

৮. নারী নির্যাতন প্রতিরোধ;

৯. নারীর ক্ষমতা ও উন্নয়নের আর্থিক ব্যবস্থা গ্রহণ;

১০. সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি;

১১.নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;

১২. সম্পদের উপর মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ;

১৩. নারী উন্নয়নের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালী করন;

১৪. গণমাধ্যমে ইতিবাচক ভূমিকা পালন;

১৫. কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি;

১৬. জাতীয় নারী সংগঠনগুলোকে আরো শক্তিশালী করন;

১৭. ধর্মীয় অপব্যাখ্যা রোধ করা;

১৮. নারীর উন্নয়নের নীতি বাস্তবায়ন;

১৯.নারীর কাজে স্বীকৃতি দেওয়া;

২০. সমতার আইন চালু করা;

২১. সার্বজনীন পারিবারিক আইনের বাস;

২২. সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা;

২৩. ধর্মীয় ও কৌশলগত ক্ষেত্রে সর্বস্তরে নারীর ক্ষমতায়ন প্রাধান্য দেওয়া;

২৪. নারীদের মাতৃসংক্রান্ত সুযোগ সুবিধার নিশ্চিত করা।

পরিশেষে বলা যায় যে, আমাদের সমাজ নারীর ক্ষমতায়নে নানা বাধায় পরিপূর্ণ। মূলত নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে উন্নয়ন করতে চাইলে অবশ্যই যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সকল বাধা অপসারণ করতে হবে এবং কেবল তখনই আমরা নারীর ক্ষমতায়নের সুফল পাব।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আপনি হয়তো এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন, প্রতিবন্ধকতা ও এর উপায় সমূহ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা পেয়েছেন। আশা করি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।

*ধন্যবাদ*

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ওয়ার্ল্ডস টুয়েন্টিফোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url