শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখার কৌশল

প্রিয় সম্মানিত পাঠক আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখার কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।আপনি যদি শরীরে ফিটনেস বজায় রাখতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখার কৌশল
আমরা জানি স্বাস্থ্যের সকল সুখের মূল। যদি শরীর ভালো না থাকে তাহলে কোন কাজে মন বসে না। তাহলে চলুন আমরা শরীরকে কিভাবে ফিটনেস রাখবো সেই ব্যাপারে জানার চেষ্টা করি।

ভূমিকা

শরীরই মানুষের প্রথম পরিচয়। তাই আমরা যদি শরীরকে ফিট রাখতে চাই তাহলে আমাদের প্রধান শর্ত হচ্ছে সুষম খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। সুষম খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার সাথে সাথে আমাদের শরীর চর্চার দিকেও নজর দিতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হলে আমাদের শারীরিক ভাবে ফিট থাকা একান্ত অবশ্যক। কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি। শরীরকে আমাদের জীবন সংগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে বলতে পারি। তাই এই হাতিয়াকে ঠিক রাখার দায়িত্ব আমাদেরই।

শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখার কৌশল

মানুষের জীবনে নিয়মিতভাবে ঘুম, খাওয়া এবং বিশ্রাম নেওয়া অবশ্য এগুলো মানুষের শরীরকে ফিট রাখতে সাহায্য করে এবং সঠিকভাবে কাজকর্ম করতে সাহায্য করে। মনে রাখতে হবে এগুলো কোনভাবেই শরীরের সুপ্ত সম্পদ গুলোর বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে না।

তাই এই বিকাশ একমাত্র নিয়মিত শরীর চর্চা বা ব্যায়ামের  মাধ্যমে সম্ভব হবে। একটা গাছের সবকিছু নির্ভর করে তার শিকড়ের ওপর, ঠিক তেমনি মানুষের চলাফেরা, ভাবনাচিন্তা ইত্যাদি সবকিছু নির্ভর করে তার স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতার ওপর। সুস্থ স্নায়ুতন্ত্র গড়তে হলে নিয়মিত অঙ্গ চালনার সাহায্যে উপযুক্ত এবং পরিমিত শরীরচর্চা প্রয়োজন রয়েছে।

আমরা সকলেই জানি, স্নায়ুতন্ত্র শরীরের মাংসপেশি নিয়ন্ত্রণ করে। তাই যদি নিয়মিত আমরা মাংসপেশির ব্যায়াম করি তাহলে সহজেই স্নায়ুতন্ত্রকে সতেজ এবং সক্রিয় করে তুলতে পারবো। এর ফলে আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ঘটবে।

শুধু তাই নয়, নিয়মিত শরীর চর্চার মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে সক্রিয় করে তুলতে পারি। তাহলে সেগুলোর ও পর্যাপ্ত বিকাশ ঘটবে এবং যার ফলে আমাদের দৈনিক কাজকর্ম সম্পাদন করার ক্ষমতা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।

দৈনিক নিয়মিত কয়েক মিনিট শরীর চর্চার মধ্যে দিয়েই শরীরের পরিপাক করার ক্ষমতা বাড়াতে পারবো, রক্ত চলাচলের ক্ষমতা ভালো করতে পারব, শ্বাস-প্রশ্বাস ভালো হবে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ আরো ভালো হবে। এক কথায় বলা যায়, একটা সুস্থ শরীরের অধিকারী হওয়া যাবে।

মনে রাখতে হবে, মাংসপেশির সক্রিয়তা এসব ব্যাপারে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। তাই নিয়মিত এমন কিছু শারীরিক কার্যকলাপের চর্চা করতে হবে, যেন শরীরের প্রধান মাংসপেশিগুলো সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পায়।


বয়স, দৈহিক গঠন, সাধারণ স্বাস্থ্য প্রভুতির দিক বিবেচনা করে ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। ব্যায়াম যে শুধু নিরানন্দ পরিশ্রমের একটি বিষয় তা কিন্তু নয়। সব রকম খেলাধুলা একদিকে আনন্দের ব্যাপার, অন্যদিকে এগুলো শারীরিক ব্যায়াম ও বটে।

  • শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখার জন্য আমাদের প্রধান ও প্রথম লক্ষ হলো ব্যায়াম।
  • শারীরিক ফিটনেস রাখার জন্য কেবল শরীরেরই নয়, আমাদের মনেরও বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।
  • ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়স্ক মানুষদের সুস্থ ও শারীরিকভাবে ঠিক থাকার জন্য সপ্তাহে ১৫০ মিনিট বা মাঝারি গতিতে এবং ৭৫ মিনিট দ্রুত গতিতে ব্যায়াম করা দরকার।
  • শরীরকে ফিট রাখার জন্য ইহগাও করতে পারেন এটা সব বয়সের মানুষ করতে পারে।
  • প্রতিদিন সকালে ২০ মিনিট করে মর্নিং ওয়াক করুন।
  • দৈনিক কমপক্ষে দুই কাপ গ্রিন-টি পান করুন।
  • দৈনিক ১৫ মিনিট করে বাইসাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • হেঁটে হেঁটে ফোনে কথা বলুন।
  • বসে থাকার অভ্যাস বাদ দিয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করার চেষ্টা করুন।
  • নিয়মিত ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • আমিষ যুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • প্রতিদিন মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন।
  • দৈনিক খাবারের সঙ্গে সালাদ খান।
  • নিজের কাজগুলো নিজে নিজেই করুন ফলে কাজের মধ্যে দিয়ে এক ধরনের ব্যায়াম করা হয়ে যায় ফলে শরীরকে ফিট রাখা সম্ভম হয়।
  • আমাদের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিকভাবেও সুস্থ থাকতে হবে।
  • মেডিটেশনের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো সম্ভব।
  • শরীরকে ফিট রাখতে হলে আমাদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
  • খাবার খাওয়ার ১৫ মিনিট আগে বা ১৫ মিনিট পরে পানি খান এতে করে হজম শক্তি বাড়বে।
  • অনেক খাবার দেখলেই আমাদের খেতে ইচ্ছে করে কিন্তু এইভাবে খাওয়া যাবেনা যখন আমাদের ক্ষুধা পাবে তখনই খেতে হবে।
  • শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন ফলে শরীর ঠিক থাকবে। দিনে দশ মিনিট এই ব্যায়াম করলে দুশ্চিন্তা অনেকটা কমে যাবে।
  • খাবার খাওয়ার সময় ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। না হলে খাবারের জরুরি উপাদান শরীরে ঠিকভাবে কাজে লাগবে না। এর ফলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিবে।
  • লিফটে না উঠে সিঁড়িতে করে উপরে উঠুন।
  • অধিক চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • সমস্ত কোমল পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন।
  • সারাদিনের তিন থেকে চার লিটার পানি পান করুন।
  • সবসময় টেনশন মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।
  • অ্যালকোহল বা অন্যান্য মদ জাতীয় জিনিস এড়িয়ে চলুন।
  • ফাস্ট ফুড  জাতীয় খাদ্য এড়িয়ে চলুন।
  • শরীরকে ফিট রাখার জন্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু শর্করা জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না।
  • শাকসবজি এবং ফলমূল বেশি বেশি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
শারীরিকভাবে ফিট থাকলে যে কোন কাজের ওপর সহজেই মন বসে বা যে কোনো কাজ অতি সহজেই করা সম্ভব হয়। শরীরকে ফিট রাখতে হলে আমাদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় সম্মানিত পাঠক এতক্ষণ আমরা শরীরকে কিভাবে ফিট রাখব সে ব্যাপারগুলো নিয়ে আলোচনা করলাম। এই তথ্যগুলো পেয়ে আপনাদের কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন এবং আপনার বন্ধুদেরও জানার সুযোগ করে দিবেন।
* ধন্যবাদ*

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ওয়ার্ল্ডস টুয়েন্টিফোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url